Home » অযত্নে ও অবহেলায় ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ অপরাজেয়-৭১ এর গ্রিল-গেট লুটপাট

অযত্নে ও অবহেলায় ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ অপরাজেয়-৭১ এর গ্রিল-গেট লুটপাট

by নিউজ ডেস্ক

আসাদুজ্জামান শামিম, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের আর্ট গ্যালারী মোড়ে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ অপরাজেয়-৭১ এর স্থাপনা হরিলুট শুরু হয়েছে। সেখানকার মেইন গেট, সীমানা প্রাচীর গ্রিল ও কয়েকলাইন ইট ইতিমধ্যেই লুট করে নিয়েছে দুবৃত্তরা।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এই স্মৃতিসৌধটি শহরের টাঙ্গন নদীর তীরে অবিস্থত। প্রতিদিন কয়েকশ দর্শনার্থী সেখানে ভীড় জমান, আড্ডা দেন। প্রত্যেক জাতীয় দিবসে সেখানে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করা হয়। এছাড়াও ওই সময়ে সেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে স্মৃতিসৌধের চারপাশের প্রাচীরের কয়েক সারী ইট, মেইন গেট ও লোহার গ্রীলগুলো কে বা কাহারা চুরি করে নিয়ে গেছে। এছাড়াও উত্তর পাশের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও মেরামত করা হয়নি স্মৃতিসৌধের স্থাপনা গুলো। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ঠাকুরগাঁও বাসী।
৭১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট অপরাজয় ৭১’র বেদীর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৯৭৬ বর্গফুট। বেদীতে ৬টি ধাপ ও সিঁড়ি স্থাপন করা হয়। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘অপরাজেয়-৭১’ এর অর্থায়ন করে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও। ২০১১ সালের ২৬ মার্চ স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০১২ সালের ২৫ মার্চ এটার নির্মাণ কাজ শেষ হয়। আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডরীর সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন স্মৃতিসৌধটির উদ্বোধন করেন। মুক্তিযেদ্ধা, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে খুবই জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা জরুরী বলে দাবি ঠাকুরগঁওবাসীর। একাধিকবার জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপিত হলেও কোন কাজ হয়নি।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেবাশীষ দত্ত সমীর বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। রাতের আঁধারে হয়তো কেউ এগুলো চুরি করে নিয়ে যেতে পারে। আমি বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েছি এবং এ কাজের সাথে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে জানিয়েছি।
সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এই স্থাপনাটি সংরক্ষণ করা খুবই জরুরী। চুরির দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও কোন পক্ষ মেরামত বা সংস্কার উদ্যোগ নেয়নি। জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে এ ব্যাপারে জরুরীভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের আহবান জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, স্মৃতিসৌধটিতে একাধিকবার গিয়েছি, চুরির বিষয়টি দেখেছি। তবে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে।
উল্লেখ্য যে, স্বাধীনতার ৪২ বছর পর উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও ২০১২ সালে শহরের টাঙ্গন নদীর তীরে মুক্তিযুদ্ধের এ স্মৃতিসৌধ ‘অপরাজেয় ৭১’ নির্মাণ করে। স্মৃতিসৌধটির নকশা ও ডিজাইন করেন প্রকৌশলী শাহরিয়ার আলম এবং ভাস্কর্য নির্মাণ করেন স্বাধীন চৌধুরী।

 

 

 

You may also like