স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো: দবিরুল ইসলাম ও ছেলে মাজহারুল ইসলাম সুজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। বুধবার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত, বালিয়াডাঙ্গী, ঠাকুরগাঁওয়ে মামলাটি দায়ের করেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়মাছখুড়িয়া গ্রামের মৃত খতিব উদ্দিনের ছেলে মো: আব্দুল জব্বার (৫৫)।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত, বালিয়াডাঙ্গী, ঠাকুরগাঁওয়ের বিজ্ঞ বিচারক রহিমা খাতুন মামলাটি গ্রহন করে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোন অপমৃত্যু মামলা বা জিআর মামলা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে রিপোর্ট দাখিলের জন্য বালিয়াডাঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ কে নির্দেশ প্রদান করেন। নালিশকারীকে অতিসত্ত্বর প্রসেস দাখিলের নির্দেশ প্রদান করে আগামী ১৭ অক্টোবার তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে আদেশের দিন ধার্য করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অত্র উপজেলার ১নং পাড়িয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য পদে মামলার ১নং আসামী শাহ আলম তৎকালীন আওয়ামীলীগ দলীয় প্রথী হিসেবে (টিউবওয়েল) প্রতীকে অংশ নেন। তার সাথে একই পদে স্থানীয় গিয়াস উদ্দিন (তালা), সামশুল হক (মোরগ) প্রতীক নিয়ে প্রতিদন্দিতা করেন।
২০১৬ সালের ৭ মে (ঘটনার দিন) স্থানীয় ৭নং ভোট কেন্দ্র কালডাংগা দাখিল মাদ্রাসায় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহন শুরু হয়ে চলতে থাকে। কিন্তু দুপুর ১টার দিকে মামলার ১নং আসামী শাহ আলম তার পরাজয়ের আশংকা থেকে ভোটকেন্দ্রে গন্ডগোল শুরু করেন। এ সময় আসামীরা প্রায় ১শ থেকে দেড়শো সন্ত্রাসী ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্র থেকে মারপিট করে বের করে দেন। পরক্ষণেই আসামীগণ প্রার্থীদের পুলিং এজেন্টদের বাহিরে বের করে দিয়ে চুড়ান্ত ফলাফলের কাগজ অর্থাৎ রেজাল্ট শীটে পছন্দমত ভোট বসিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে তাদেরও বের করে দেওয়া হয়। এ সময় স্থানীয় মানুষজন ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য এগিয়ে গেলে পৌনে ২ টার দিকে ৪/৫ নং আসামীর হুকুমে অন্যান্য আসামীগণ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র দ্বারা মাদ্রাসা মাঠের সাধারণ ভোটারদের উপর আক্রমন করে। এ সময় অনেকেই গুরুতর আহত হন। একপর্যায়ে ৪/৫ নং আসামীর হুকুমে (১,২,৬,৭,১৭) নং আসামীগণ কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের রইফেল কেড়ে নিয়ে নিরীহ জনসাধারণের উপর গুলি চালানো শুরু করে। এ সময় মামলার বাদীর ছেলে মো: মাহাবুব আলম পল্টু ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পুলিশ তার লাশ প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতাল পরের দিন ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের অর্ন্তগত মর্গে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত ও ময়না তদন্ত করে তৎকালীণ বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ গ্রামের বাড়িতে উপস্থিত থেকে মরদেহ দাফন করায়। পরবর্তিতে এ বিষয়ে কোন মামলা নেয়নি পুলিশ।
এ ঘটনায় আসামীরা হলেন, সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো: দবিরুল ইসলাম, ছেলে মাজহারুল ইসলাম সুজন, মোমিনুল ইসলাম ওরফে সুমন, ভাই আলহাজ্ব মো: শফিকুল ইসলাম, ভাতিজা আলী আসলাম জুয়েলসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে ১শ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়।
ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক ২ এমপির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
৯১