নবীন হাসান : ঠাকুরগাঁওয়ের গোবিন্দ নগর মুন্সিহাট গ্রামের শাকিল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ সৈনিক। বয়স তার ২৬ বছর। মা মারা গিয়েছে যখন তার বয়স ১২ বছর । মা মারা যাওয়ার পরে বাবা করেছে দ্বিতীয় বিয়ে। তখন থেকেই অনেকটা অবহেলায় বড় হয়েছে এতিম এই ছেলেটি। যেতে পারেনি স্কুলে।
দুমুঠো ভাতের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে। কোন উপায় না পেয়ে তখন থেকেই স্থানীয় একটি হোটেলে কাজ করে দিন যাপন করে সে । বসবাস করে সরকারি খাস জমির ছোট্ট একটি ঘরে।
পাঁচ বছর আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় মোহাম্মদ সৈনিক। এর পরে তার ঘরে আসে ফুটফুটে একটি সন্তান। ভালোই চলছিল তাদের সংসার। এরপরে হঠাৎ ক্রনিক লিভার ডিজিজে ও এসাইটিজে আক্রান্ত হয় সে। এক বছর ধার দেনা ও স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করলেও অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় চিকিৎসা। সৈনিক অসুস্থ হওয়ায় আর কাজে যেতে পারে না। দেখা দেয় সংসারে অভাব অনটন। থাকতে হয় অনাহারে অধ্যাহারে । যেখানে দু মুঠো ভাত জোগাড় করাই কষ্ট সেখানে চিকিৎসা তার কাছে বিলাসিতা । এভাবেই প্রায় তিন বছর ধরে বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে মরছে সে। অভাব অনটন সহ্য না করতে পেরে বউ তার বাচ্চাকে নিয়ে চলে গেছে বাবার বাসায় ।
সবাই যখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অনেকটা অভিমান করে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিন গুনছে সে।
এরপরে বিষয়টি নজরে আশে খবরের কাগজের ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধির। তাকে নিয়ে ভর্তি করে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে। শুরু হয় তার চিকিৎসা। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাকিবুল আলম চয়নের সহযোগিতায় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় বিনামূল্যে । তার হার্নিয়া সহ দুটি অপারেশনের প্রয়োজন । ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা না থাকায় ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে রেফার্ড করে। ডাক্তার বলেছে অপারেশন ও বিভিন্ন পরীক্ষার নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা । সেই সাথে যাতায়াত ও থাকা খাওয়ার জন্য প্রয়োজন ১০ হাজার টাকা।
কিন্তু মাত্র ৫০ হাজার টাকার জন্য ধুকে ধুকে বিছানায় কাতরাচ্ছে সৈনিক । টাকা জোগাড় করতে না পারায় দিন গুনছে মৃত্যুর।
মুন্সিরহাট গ্রামের আব্দুর রহিম বলেন, মোহাম্মদ সৈনিক দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে ভুগছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না । বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় কাজও যেতে পারে না। তাই চিকিৎসা তো দূরের কথা সময়মতো তিন বেলা খাবারও পায় না।
একই গ্রামের মজিদা বেগম বলেন, ছেলেটা খুব অসহায়। ভরণপোষণ দিতে না পারায় তার বউ বাচ্চাকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেছে । এখন তাকে দেখার মত আর কেউ নেই।
এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, অল্প কিছু টাকার অভাবে সৈনিক ধুঁকে ধুঁকে মরছে। সমাজের বিত্তবান যারা রয়েছে তারা যদি এগিয়ে আসে এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে সৈনিক সুস্থ হয়ে উঠবে। পাশাপাশি তার পরিবারটিও টিকে যাবে।
মোহাম্মদ সৈনিক বলেন, চার বছর ধরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছি। ধার দেনা করে এক বছর চিকিৎসা চালিয়েছি কিন্তু এর পরে আর পেরে ওঠিনি। এখন আমি মৃত্যু শয্যায় রয়েছি। চিকিৎসা করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। যা যোগাড় করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সংসার চালাতে না পারায় বউ বাচ্চাকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেছে। তাই সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি।
তাকে সাহায্য পাঠাতে পারেন নগদের 01334356596 অ্যাকাউন্টে।