Home » আদালত আমার জমি ফিরিয়ে দিয়েছে, এখন আমি মরেও শান্তি পাবো’

আদালত আমার জমি ফিরিয়ে দিয়েছে, এখন আমি মরেও শান্তি পাবো’

by নিউজ ডেস্ক

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:
শত বছর বয়সী অবসর প্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক খলিলুর রহমান। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ক্ষমতার কাছে হেরে গিয়ে ৯শতক জমির দখল হারিয়ে আদালতের আশ্রয় নেন। এরপর মামলাতে আদালত পারায় কেটে গেছে ১১টি বছর। জীবনের শেষ ইচ্ছে ছিল বেঁচে থাকতে আদালত থেকে রায় পেয়ে জমির দখল বুঝে পাবেন তিনি। অবশেষে সেই ইচ্ছে পুরণ হয়েছে তার। এখন মরেও শান্তি পাবেন তিনি।

শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা দায়রা জজ আদালতের নির্দেশে শিক্ষক খলিলুর রহমানের ৯ শতক জমি ঢোল পিটিয়ে দখল করে দেয় আইন শৃংখলা বাহিনী।

বয়সের ভারে চলতে না পারা শতবর্ষী খলিলুর রহমান চেয়ারে বসে অশ্রুশিক্ত নয়নে বলেন, আল্লাহ আমার শেষ ইচ্ছে পুরণ করেছে, আদালত আমাকে ন্যায় বিচার দিয়েছে। এখন আমি মরেও শান্তি পাবো।

এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালদের দায়িত্ব প্রাপ্ত লোকজন বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের সহযোগিতায় সীমানা নির্ধারণ করে লাল কাপড় টাঙিয়ে দেয়। এরপর ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করেন এই জমির দখল বুঝে দেওয়া হলো মামলার বাড়ী খলিলুর রহমানকে।

খলিলুর রহমানের ছেলে নুরে আলম জানান, বালিয়াডাঙ্গী বাজারের তেরকোনা গ্রামে ৯ শতক জমি আমাদের দখলে ছিল। ১১ বছর আগে স্থানীয় প্রভাবশালী ইবনে, আবুল কাশেম মানিক ও আশরাফ আলী দখল করে নিয়ে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে। বাধা দিতে আসলে শতবছর বয়সী বৃদ্ধ বাবাসহ সবাইকে নির্যাতন করেছে।

২০১৩ সালে বাবা আদালতে ফোজদারি এবং সিভিল মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার শুনানি, আপিল শেষ করে আমরা রায় পেয়েছি। আদালত সেই জমি আজ দখল করে বুঝে দিলো। আমার বাবা সবচেয়ে খুশি আজকে।
খলিলুর রহমান উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের মধুপুর নয়াদিঘী এম রফিক আলিম মাদ্রাসায় ক্বারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৬ বছর হলো অবসর নিয়েছেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জবরদখল করা এই জমিতে পাকা স্থাপনা করে একটি বেসরকারি কিন্ডার গার্টেনকে ভাড়া দিয়েছিল বিবাদী ইবনে। শনিবার জমি উদ্ধার করে দিতে আদালতের লোকজন আসলে বাচ্চাদের ছুটি দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পেশকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মামলায় রায় পাওয়ার দখল করিয়ে নিতে আবেদন করেছিল মামলা বাদী খলিলুর রহমান। আমরা বিচারক মহোদয়ের নির্দেশনায় পুলিশকে সাথে নিয়ে জমির দখল বুঝিয়ে দিয়েছি। রায় পাওয়ার পরও যদি কেউ জমি দখল নিতে না পারেন, তাহলে নির্ধারিত ফি দখল করিয়ে নেওয়ার আবেদন করলে আদালত এই সহযোগিতা করবে।

You may also like

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. সাকের উল্লাহ

স্বত্ব © ২০২৪ দৈনিক লোকায়ন