প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৫, ২০২৪, ৩:২৫ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩, ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ
ইতালিতে বিপুল উৎসাহ পাচ্ছে ‘কুৎসিতদের ক্লাব’
আধুনিক যুগে সৌন্দর্যের প্রথাগত ধারণা কি সবার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে? সমালোচকেরা সেই সংজ্ঞার বিরোধিতা করেন। ইতালির এক ক্লাব একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে এমন গতানুগতিক ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে আসছে।
ইতালির মার্কে অঞ্চলের পবিকোয় একশো বছরেরও বেশি আগে গঠন করা হয়েছিল এই ক্লাব। মূলত ১৮৭৯ সালে পাত্রপাত্রীদের মধ্যে ঘটকালির মঞ্চ হিসেবে চালু হয় এটি।
তবে গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে সদস্যরা বাঁধাধরা সৌন্দর্য্যের ধারণার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। সুন্দর হোক বা কুৎসিত, যে কেও ক্লাবের সদস্য হতে পারেন। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৫,০০০ সদস্য ছড়িয়ে রয়েছেন।
ক্লাবের সহ-সভাপতি জানি আলুইজি বলেন, ‘আমাদের নীতি হলো, কুৎসিত হওয়া একটা গুণ, আর সৌন্দর্যের দাসত্ব করতে হয়।
আমরা প্রথাগত সৌন্দর্যকে ঘিরে উন্মাদনার বিরোধী। সে ক্ষেত্রে কম সুন্দর মানুষকে বঞ্চিত করা হয়। তারা কষ্ট পায়, তাদের তিনগুণ বেশি সংগ্রাম করতে হয়। সবকিছু বাহ্যিক রূপকে ঘিরে চলে।
আমরা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করি। আমরা অন্তরের সৌন্দর্য, বুদ্ধিমত্তা ও পছন্দের মতো অন্যান্য মূল্যবোধের উপর জোর দেই৷’‘ইতালির কুৎসিততম মানুষ' খেতাবজয়ী দানিয়েলে ইসাবেতিনি বলেন, ‘আমি কুৎসিত, সত্যি বড় কুৎসিত। তাতে আমার কিছু করার নেই। আমি বরং গর্ব বোধ করি। আমার খেতাব কেড়ে নিতে চাইলে সামনে এসে কঠিন লড়াই করতে হবে কিন্তু।
৫৮ বছর বয়সি দানিয়েলে কিন্তু চিরকাল এমন দেখতে ছিলেন না। ৩০ বছর আগে মারাত্মক এক গাড়ি দুর্ঘটনার পর তাঁর মুখে বার বার অপারেশন করতে হয়েছিল। একটি পাও কেটে বাদ দিতে হয়েছিল তাঁর।
দানিয়েলে বলেন, ‘ইটালির কুৎসিততম মানুষের খেতাব আমি ধরে রাখতে চাই। এতেই আমার আনন্দ। সেই খেতাব জয়ের পর থেকে আমার জীবনের উন্নতি হয়েছে। অনেক জায়গা ঘুরতে পারি। টেলিভিশন, বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও উৎসবে আমাকে ডাকা হয়। মানুষ আমার সম্পর্কে আরো জানতে চায়, আমাকে চিনতে চায়।’
প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে পবিকো শহরে ‘কুৎসিতদের উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়। সেই উৎসব গানবাজনা, নাচ ও হাস্যরসে ভরা। কেওই নিজেকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় না। তিন দিনের এই গণ উৎসবে স্থানীয় ভুট্টার পদের মতো খাবার পাওয়া যায়।
এবার সেরা কুৎসিতের খেতাব কে পাবেন? দানিয়েলে ইসাবেতিনি এই নিয়ে পাঁচ বার সেই খেতাব জিতে নিলেন। তবে চলতি বছর তিনিই একমাত্র প্রতিযোগী ছিলেন।
তিনি বলেন ‘এবার কেউ আমার বিপক্ষে দাঁড়ানোর সাহস পায় নি। আমি খেতাব জিতে খুব খুশি। আগামী বছরও অংশ নেব। দশ বছর ধরে আমি নির্বাচিত হতে চাই। আমি একটি কথাই বলবো। তোমরা পবিকোয় এসো। এখানে আমরা সবাই খুব ভালো আছি। সবাইকে ধন্যবাদ, সবার জন্য চুম্বন।’
কোনো এক দিন তিনি কুৎসিতদের ক্লাবের সভাপতি হবার স্বপ্ন দেখেন।
সূত্র : ডয়চে ভেলে
স্বত্ব © ২০২৪ দৈনিক লোকায়ন