আন্তর্জাতিক ডেস্ক ||
ইরাকের পার্লামেন্টে সমকামিতাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে একটি বিল পাস হয়েছে। গতকাল শনিবার এই বিলটি পাস হয়।
নতুন আইন অনুযায়ী, দেশটিতে সমকামিতায় অভিযুক্ত ব্যক্তির ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। এ ছাড়া ট্রান্সজেন্ডারদেরও এক থেকে তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
নতুন এই আইনের সমর্থকেরা বলছেন, এই আইন দেশটিতে ধর্মীয় মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে সহায়তা করবে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, এটি এলজিবিটি মানুষদের বিরুদ্ধে ইরাকের মানবাধিকার রেকর্ডে আরও একটি কালো দাগ।
যারা সমকামিতা বা পতিতাবৃত্তির প্রচার করে, যেসব চিকিৎসক লিঙ্গ পরিবর্তন সার্জারি করেন, যেসব পুরুষ ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ নারীদের মতো আচরণ করেন এবং যারা ‘স্ত্রী অদলবদল’ করে নতুন আইনে তাদেরও কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে।
এই আইনের আগের খসড়ায় সমকামী সম্পর্কের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড প্রস্তাব করা হয়েছিল। ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে পাস হওয়া পতিতাবৃত্তি বিরোধী আইনের সংশোধনী হিসেবে এই খসড়া প্রস্তুত করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের বিরোধিতার মুখে পরবর্তীতে আইনটি সংশোধন করা হয়।
সাংসদ আমির আল-মামুরি শাফাক নিউজকে বলেন, ‘নতুন আইনটি ইসলামি ও সামাজিক মূল্যবোধের বিপরীতে যৌন বিকৃতি মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
সাংসদ আল-মালিকি জানান. চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির মার্কিন সফরের আগ পর্যন্ত বিলটি পাস করা স্থগিত করা হয়েছিল। তিনিই এই আইনের সংশোধনী উত্থাপন করেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে আল–মালিকি বলেন, ‘আমরা এ সফর বিঘ্নিত করতে চাইনি। এটি সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ বিষয় আর আমরা ইরাকের বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ গ্রহণ করিনা।’
ইরাকে সমকামিতা নিষিদ্ধ, তবে আগে এর বিরুদ্ধে দেশটিতে কোনো নির্দিষ্ট আইন ছিল না।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নতুন সংশোধিত আইনটি মানবাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য হুমকি। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আইনটি ইরাকের অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করার এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার ক্ষমতাকেও দুর্বল করে দেবে। আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক জোট ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে যে ইরাকে এই ধরনের বৈষম্য দেশটির ব্যবসা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
রাইজিংবিডি.কম