লোকায়ন ডেস্ক:
গাজায় ইসরায়েলি তাণ্ডবে প্রতিদিন শত শত ফিলিস্তিনি প্রাণ হারাচ্ছে। সেখানে হাসপাতাল, বাড়ি-ঘর, মসজিদ কোনো কিছুই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না। যারা বিভিন্ন ধরনের সহায়তার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন তাদের ওপরও হামলা চালানো হচ্ছে।
রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সহায়তা সংস্থার সদস্যরা হামলায় হতাহত হচ্ছেন। ত্রাণ সহায়তা বা চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়েও প্রাণ হারাচ্ছেন বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা।
গাজায় প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, গাজায় সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সংস্থাটির ২৬ সদস্যকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
সংস্থাটি বলছে, তাদের প্রায় ১৫ জন কর্মী মানবিক দায়িত্ব পালনের সময় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। সে সময় তারা রেড ক্রিসেন্টের পোশাক পরা ছিলেন। তারপরেও তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে গাজার আল শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী, যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত মানুষ, মেডিকেল কর্মীসহ চার শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। সেখানে ১৩ দিন ধরে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। খবর আল জাজিরার।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরই গাজায় আক্রমণ করে ইসরায়েল। গাজার উত্তর, দক্ষিণ এবং মধ্যাঞ্চলে কোনো স্থানই ইসরায়েলি আগ্রাসন থেকে রেহায় পায়নি। পুরো গাজা যেন এখন এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানকার অধিকাংশ মসজিদ, বাড়ি-ঘর এবং ভবনই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় কমপক্ষে ৩২ হাজার ৭০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৭৫ হাজার ১৯০ জন।
অপরদিকে গাজায় অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে মিশর, ফ্রান্স এবং জর্ডান। একই সঙ্গে হামাসের হাতে জিম্মি থাকা লোকজনকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়। শনিবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে তিন দেশের কূটনীতিকদের মধ্যে বৈঠকের পর তারা গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। খবর আল জাজিরার।
এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন সেজোর্নে বলেন, এই যুদ্ধের রাজনৈতিকভাবে নিষ্পত্তির জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করবে তার সরকার।
তিনি বলেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধানের সব মানদণ্ডই এতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ভাবে এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হলেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার এর বিরোধিতা করে আসছে।