স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন ও ছেলে-মেয়েরা। দল থেকে এমন নির্দেশনা দিলেও তার তোয়াক্কা করছে না ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনরা।
ঠাকুরগাঁও- ২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সুজন এমপির চাচা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী , উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো: সফিকুল ইসলাম ও চাচাতো ভাই আলী আফসার অংশ নিয়েছেন।
নির্বাচনের অংশ নেয়া বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও এমপি সুজনের চাচা মোহাম্মদ আলী বলেন, কিছুদিন আগে সংসদ নির্বাচনে আমার ছেলে আলী আসলাম জুয়েল ও মাজহারুল ইসলাম সুজনের লড়াই হয়েছে। আমাদের আত্মীয়তা তখনই খারিজ হয়ে গেছে। তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। তাহলে আমরা কেমনে আত্মীয় হলাম। আমি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করি তাহলে সরকার যে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো বা নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বলছে সেটা হবে না। সরকার চাইছে একটি অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন। আমি না দাঁড়ালে সেটা তো হবে না। তাই আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাই। আমি না দাঁড়ালে এখানে খেলোয়ার নাই। খেলোয়াড় না থাকলে খেলা কেমনে জমবে। তারপরও আমাদের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আছে তিনি যা নির্দেশনা দিবেন সে অনুযায়ী কাজ করব। তিনি যদি নিষেধ করে তাহলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না।
অন্যদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনের আরেক চাচা সফিকুল ইসলাম বলেন, খবরের মাধ্যমে শুনেছি আমাকে জেলা কমিটি এখনো কিছু বলেনি। জেলা কমিটি যখন বলবে তখন দেখা যাবে কি হবে। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের পদে তো আমি সাধারণ সদস্য বড় কোন পদে নেই। আর তাছাড়া আমি তো আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে পড়িনা , আমি তো বংশীয় লোক। দলীয় সিদ্ধান্তে , শালা, সমন্দি, বোনজামাই, ভগ্নিপতি এগুলা কথা বলা হয়েছে চাচার কথা তো বলা হয়নি পেপার – পত্রিকায় যা দেখলাম। তারপরও দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেব।
এ বিষয়ে মাজারুল ইসলাম সুজন এর চাচাতো ভাই ও আরেক প্রার্থী মোহাম্মদ আলীর ছেলে আলি আফসারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সুজন বলেন, আমি মনে করি দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া উচিত। কিন্তু গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার বিরোধিতা করেছে আমার আত্মীয়রাই। তারা কি আমার কথা শুনবে। যেখানে তারা আমার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছে। যারা নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেছে আমার বিরোধিতা করেছে। তারা তো আমাকে আত্মীয় স্বীকারই করে না সেখানে আমার কথা কিভাবে শুনবে। আমার দলের হাই কমান্ড বলে দিয়েছে নির্বাচন হবে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ। আমি এমপি হিসেবে নিরপেক্ষ থাকব।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায় বলেন, কেন্দ্র থেকে আমাদের কাছে তথ্য জানতে চেয়েছিল এমপির নিকট আত্মীয় কারা কারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। আমরা সেই তথ্য হাই কমান্ডকে দিয়েছি। আমাদের দলীয় সভানেত্রী যা সিদ্ধান্ত নিবেন আমরা সেটা বাস্তবায়ন করব।
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, এবারের উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে আপিল নিষ্পত্তি হবে রবিবার (২১ এপ্রিল)। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় সোমবার (২২ এপ্রিল)। তার পরদিন মঙ্গলবার প্রতীক বরাদ্দ হবে।