ডা: শীলা রাণী কর্মকার
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সকে মানবসভ্যতার জন্য ভয়াবহ ১০ টি স্বাস্থ্য হুমকির মধ্যে
একটি স্বাস্থ্য হুমকি হিসেবে ঘোষণা করেছেন। বর্তমানে প্রতি বছর ১২ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষ
এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের কারনে মারা যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ ১ কোটি
মানুষ মারা যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে সব কারণে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স হয় তার মধ্যে অন্যতম
হলো বিনা প্রেসক্রিপশনে এন্টিবায়োটিক সেবন, পুরো কোর্স শেষ না করেই মাঝপথে খাওয়া বন্ধ করা,
প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প ডোজের এন্টিবায়োটিক গ্রহণ, সঠিক এন্টিবায়োটিক গ্রহণ না করা বা অপ্রয়োজনীয়
এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করা। এমতঅবস্থায় দেশের শিক্ষা কারিকুলামের পাঠ্যবইয়ে "এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স
" বিষয়ে পাঠ যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
এন্টিবায়োটিকের অপপ্রয়োগ ও অতিরিক্ত ব্যাবহারের ফলে যে ড্রাগ সেনসিটিভিটি বা এন্টিবায়োটিক
প্রতিরোধীতা মানব শরীরে তৈরি হচ্ছে তার ভয়াবহতা কতটা মারাত্মক হতে পারে সে পূর্বাভাস দিচ্ছে বাংলাদেশ
সহ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থাগুলো এবং উন্নত বিশ্ব। ইতিমধ্যে জাতীয় সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে বিভিন্ন
সচেতনতা মূলক সংবাদ প্রায়ই প্রকাশিত হচ্ছে। আমাদের দেশেও প্রায় ৩৬ টি এন্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে
পরেছে। এর বিকল্প চিন্তা কী আমরা করতে পারি না! রোগ থেকে মুক্তি লাভ করাই যখন উদ্দেশ্য তখন
কেবল এন্টিবায়োটিক এর উপর নির্ভরশীলতা কেন বাড়াতে হবে , যখন হোমিওপ্যাথি বলছে রোগ নয় রোগীর
চিকিৎসা করা হল এর মূল লক্ষ্য এবং রোগীর কষ্টকর উপসর্গগুলো দ্রুত, সচ্ছন্দ ও স্থায়ীভাবে আরোগ্য
সম্পাদনই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মূলনীতি । এন্টিবায়োটিকের মতো কার্যকর পচন ও সংক্রমণরোধী ঔষধ
হোমিওপ্যাথিতে রয়েছে। হিপার সালফার, মার্কসল, সাইলিসিয়া,টিউবারকুলিনাম, ব্যাসিলিনাম, সিফিলিনাম
ইত্যাদি অনেক ঔষধের পূঁজ শোষণ, ক্ষত নিবারণ ও সংক্রমণবিরোধী ক্ষমতা ও গুনাগুন রয়েছে।
মার্কিউরিয়াস ঔষধটি তৈরী করা হয় পারদ থেকে, হিপার সালফার প্রস্তুত করা হয় ক্যালসিয়াম সালফাইড
এবং গন্ধক এই দুইটি দ্রব্যের রাসায়নিক সংযোগে। জ্বর, কাশি, সর্দি, হাঁপানি, টনসিল, উদরাময়, ব্রঙ্কাইটিস
ইত্যাদি ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করা হয়। টিউবারকুলিলাম প্রস্তুত করা হয় টিউবারকিউলোসিস জীবানু হতে,
প্রয়োগ করা হয় সামান্য কারনেই সর্দি লাগা, কাশি, কানের রোগ, মৃগী রোগ, জ্বর, উদরাময় ইত্যাদি
অনেক ক্ষেত্রে ।
আমরা হোমিওপ্যাথিক ঔষধ কে কেবল মাছের কাঁটা বের করতে উপযুক্ত মনে করি এবং এর কার্যকারীতা ও
ব্যাবহারকে সীমিত রেখেছি। উপযুক্ত এবং সঠিকভাবে ব্যবহার হলে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ মানবকল্যানে
আরও ব্যপক ভূমিকা রাখবে । সুস্থ সুন্দর দেশ ও জাতী গঠনে হোমিওপ্যাথির ভুমিকা নিয়ে নিয়মিত আয়োজন
নিয়ে আপনাদের পাশে আছি।
হোমিওপ্যাথিকে জানুন, নিজে সুস্থ থাকুন পরিবারকে সুস্থ রাখুন।
সূত্র :ইন্টারনেট, গণমাধ্যম ও জাতীয় পত্রিকা হতে প্রাপ্ত তথ্য।
লেখক : শিক্ষক, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক, বিএসসি সম্মান এম এস সি (উদ্ভিদ বিজ্ঞান) রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়, ডি এইচ এম এস ( ঢাকা ) ।