লোকায়ন ডেস্ক: দেশে ইউরিয়া সারের উৎপাদন বাড়াতে নরসিংদীর পলাশে নির্মিত হয়েছে এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা। আর এই সার কারখানা চলতি মাসে ২৮ জানুয়ারি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাচ্ছে।
বর্তমান সরকারের মেগা প্রকল্পের একটি হলো এই ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা। যার দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। আর বছরে উৎপাদন হবে ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন। এতে করে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে নরসিংদী জেলা তথা পুরো বাংলাদেশ।
২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি উপস্থিত হয়ে এই সার কারখানাটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। কিন্তু গ্যাস সংকট ও কারিগরি জটিলতার কারণে কিছুদিন পরীক্ষামূলক উৎপাদন হয়ে পরে বন্ধ থাকে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার পর ১৫ জানুয়ারি সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক মো. রাজিউর রহমান মল্লিক বলেন, চলতি মাসের ২৮ জানুয়ারি সার কারখানাটি পুরোদমে বাণিজ্যিকভাবে সার উৎপাদনে আসবে। এ ছাড়াও সার কারখানার ভিতরে রেললাইনের কাজ শুরু হয়েছে। টেন্ডার করার পর সার কারখানার বাইরেও রেললাইন করার কাজ শুরু হবে।
উল্লেখ্য, প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২০২০ সালের ১০ মার্চ। শেষ হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বর। নির্ধারিত তারিখের আগেই সার কারখানাটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে সক্ষম হন কর্তৃপক্ষ। কারখানাটি উৎপাদনে এলে এখান থেকে পাওয়া যাবে বছরে ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার। এতে আমদানি নির্ভরতা ৫ ভাগের ১ ভাগে নেমে আসবে। বছরে সাশ্রয় হবে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। আধুনিক আর পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তিতে নির্মাণ করা হয়েছে কারখানাটি।
কারখানাটি যৌথভাবে নির্মাণ করেছেন জাপানের মিটসুবিসি হেবি ইন্ডাস্ট্রিজ ও চায়না প্রতিষ্ঠান সিসি সেভেন। এটি নির্মাণে বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাংলাদেশে যত সার কারখানা আছে, তাতে কার্বন ডাই-অক্সাইড অর্থাৎ যে গ্যাসটা পরিবেশকে দূষিত করে সেই গ্যাস আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুধু সার কারখানা নয়, দেশের সবগুলো পাওয়ার প্লান্টেও এই দূষিত গ্যাসগুলো আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এটিই বাংলাদেশের প্রথম সার কারখানা হবে, যেখানে দূষিত গ্যাসগুলো আকাশে ছেড়ে না দিয়ে ধরে প্রজেক্ট প্রসেজের মধ্যে এনে অতিরিক্ত ১০ ভাগ ইউরিয়া সার উৎপাদন করা হবে। সম্মিলিতভাবে লেটেস্ট টেকনোলজি ব্যবহার করার প্রেক্ষিতেই প্রতিদিন ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার তৈরি করা হবে।