স্টাফ রিপোর্টার : ঠাকুরগাঁওয়ে বাণিজ্যিকভিত্তিতে চাষ করা এক কৃষকের প্রায় ২৫ শতাংশ জমির করলা গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ওই করলা ক্ষেতের কৃষক ও তার পরিবার।
মঙ্গলবার (২৮ মে) ভোররাতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের নেউলাপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত ঐ কৃষকের নাম তরিকুল আলম। তিনি সালন্দর ইউনিয়নের নেউলাপাড়া গ্রামের প্রয়াত আশির উদ্দীনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, কৃষক তরিকুল ইসলাম ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। উপায় না পেয়ে তাই সংসারের অভাব ঘোচানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন তাঁর স্ত্রী জান্নাতুন ফেরদৌসি ও ছেলে নূর মোস্তফা মিম। বাড়ির পাশে এক বিঘা জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে করলা চাষ করেন তারা। দিন-রাত পরিশ্রম করে সেই করলা ক্ষেতে ফলন আসতেও শুরু করে। তারা স্বপ্ন বুনে এবার হয়তো তাদের সংসারের অভাব ঘোচাবে। কিন্তু এরই মধ্যে স্থানীয় প্রতিবেশি মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে কৃষক তরিকুল ইসলামের জমি নিয়ে বিরোধ শুরু হয়।
কৃষক তরিকুল ইসলামের স্ত্রী জান্নাতুন ফেরদৌসি বলেন, পরিবারের অভাব ঘোচানোর জন্য কলেজপড়–য়া ছেলে নূর মোস্তাফা ও স্বামী তরিকুলকে নিয়ে একবিঘা জমিতে করলা চাষ করা হয়। এদিকে জমি বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার ভোররাতে আমাদের একবিঘা জমির মধ্যে ২৫ শতাংশ জমির প্রায় ৩৫০টি করলা গাছ কেটে দেয় প্রতিবেশি মোহাম্মদ আলী ও তার লোকজন। জমি নিয়ে বিরোধ থাকতেই পারে কিন্তু তাই বলে তারা আমাদের করলা ক্ষেত এভাবে কেটে দিবে। এটা কোন সচেতন মানুষের কাজ হতে পারে না। এ সময় তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে এ ক্ষতির বিচার চান।
কলেজপড়–য়া ছেলে নূর মোস্তফা বলেন, প্রচন্ড রোদ উপক্ষে করে মা-বাবা সহ এই করলা ক্ষেত করেছি। রাতের আঁধারে করলা গাছে গোড়া কেটে দিয়েছে তারা। এটা একেবারে অমানবিক কাজ। আমরা স্বপ্ন বুনেছিলাম অভাব ঘোচানোর, কিন্তু আমাদের সেই স্বপ্ন নষ্ট করে দিল তারা।
কৃষক তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবেশি মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। তারা তো আমাদেরকে বলতে পারতো, আমরা বসে সেটি সমাধান করতাম। কিন্তু তা না করে তারা আমাদের করলা ক্ষেত কেটে দিয়েছে। শুধু এই করলা ক্ষেত নয় তারা কিছুদিন আগের আমাদের একটি ধান রাখার ঘরে আগুনও ধরিয়ে দিয়েছিল। আগুনের বিষয়ে আদালতের মামলা চলমান রয়েছে। আমি তাদের শাস্তি চাই।
এদিকে করলা ক্ষেতের বিষয়টি প্রশাসন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও স্থানীয় লোকজনের।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলীর মুঠোফোনে যোগাযো করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, করলা ক্ষেত কেটে দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে এজাহার দেওয়ার জন্য, এজাহার দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।