লোকায়ন ডেস্ক
স্থানীয় ব্যাটার সৈকত আলী হাফসেঞ্চুরি করলেন, হাতখুলে খেলারও চেষ্টা করলেন। কিন্তু তার এই হাফসেঞ্চুরি বা শেষের দিকে হাতখুলে খেলা কোনো কাজেই আসলো না। শুরুতে যে স্লো ব্যাটিংটা করলেন, তাতেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের জয়ের সম্ভাবনা নস্যাৎ হয়ে গিয়েছিলো। ব্যবধান কতটা কমাতে পারে চট্টগ্রাম, সেটাই ছিল দেখার বাকি।
শেষ পর্যন্ত পরাজয়ই নিয়তি হয়ে দাঁড়ালো চট্টগ্রামের জন্য। রংপুর রাইডার্সের ২১২ রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স হারলো ৫৩ রানের বড় ব্যবধানে।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রিজা হেন্ডরিক্স, সাকিব আল হাসান, জিমি নিশাম আর নুরুল হাসান সোহানদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ২১২ রান সংগ্রহ করে রংপুর রাইডার্স। জবাব দিতে নেমে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স থেমেছে ১৫৮ রানেই।
এ জয়ে ৮ ম্যাচ শেষে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানে নিজেদের অবস্থান নিরঙ্কুশ করে নিয়েছে রংপুর রাইডার্স। সমান ম্যাচে চট্টগ্রামের পয়েন্ট ১০। তারা রয়েছেন তিন নম্বর স্থানে। ১০ পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় স্থানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
আগের ম্যাচের মত অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখালেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে ১৬ বলে ২৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলার পর বল হাতে ছিলেন অনেকটাই কৃপণ। ২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যও রংপুরের জয়ে বেশ ভালো অবদান রেখেছে।
মূলত ২১২ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে হবে, এ চিন্তাই হয়তো চট্টগ্রামের ব্যাটারদের মধ্যে শুরুতেই এক ধরনের হতাশা তৈরি করেছিলো। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার জস ব্রাউন এবং সৈকত আলি শুরুটা করেছিলো খুবই মন্থর গতিতে। ১২ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে। কিন্তু ততক্ষণে চট্টগ্রাম খেলেছে ২০ বল (২.৪ ওভার)। সাকিবের বলেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
অষ্টম ওভারের প্রথম বলে ইমরান তাহিরের বলে এলবিডব্লিউ হলেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার টম ব্রুস। ১৩ বলে ১৪ রান করেন ব্রুস। তবে এই অস্ট্রেলিয়ানকে আউট করার পর ইমরান তাহিরের দুই হাত উঁচিয়ে দৌড় দেওয়া এবং শেষে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো স্টাইলে উদযাপন ছিল চোখে পড়ার মতো।
সৈকত আলী আর শাহাদাত হোসেন দিপু বেশ কিছুক্ষণ উইকেটে টিকে ছিলেন। কিন্তু তাদের ব্যাট থেকে ঠিক টি-টোয়েন্টি টাইপের মারমুখি খেলা দেখা যায়নি। শাহাদাত দিপু ১৩ বলে ৯ রান করে আউট হওয়ার পর মাঠে নামেন কার্টিস ক্যাম্ফার। আয়ারল্যান্ডের এই অলরাউন্ডার মাঠে নেমেই রান বাড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে ২১ বলে ২৪ রানেই থামতে হয় তাকে।
সৈকত আলী শেষদিকে হাতখুলে খেলে ৪৫ বলে করেন ৬৩ রান। ১টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৬টি ছক্কার মার মারেন তিনি। শেষে রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন চট্টগ্রামের এই ওপেনার।
অধিনায়ক শুভাগত হোমও টি-টোয়েন্টি চাহিদা মিটিয়ে ব্যাট করেছেন। তবে দলের হার ততক্ষণে নিশ্চিত হয়ে গেছে। ১৩ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান তুলতে সক্ষম হয় চট্টগ্রাম।
ব্যাট হাতে ২৬ বলে অপরাজিত ৫১ রান এবং বল হাতে ৩২ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের জিমি নিশাম। আজই প্রথম রংপুরের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন এই কিউই অলরাউন্ডার। মাঠে নেমেই জিতে নিলেন সেরা পারফরমারের পুরস্কার।