Home » ঠাকুরগাঁওয়ে শহীদ মোহাম্মদ আলীর নাতনীর পড়ালেখার দায়ীত্ব নিলেন ব্যারিস্টার সাদিক

ঠাকুরগাঁওয়ে শহীদ মোহাম্মদ আলীর নাতনীর পড়ালেখার দায়ীত্ব নিলেন ব্যারিস্টার সাদিক

by নিউজ ডেস্ক

লোকায়ন রির্পোট ॥ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম শহীদ মোহাম্মদ আলীর অসহায় পরিবারের হাতে শীতবস্ত্র হিসেবে লেপ তুলে দিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নী জেনারেল ব্যারিস্টার নুর উস সাদিক চৌধুরী। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি নিজে শহরের আদর্শ কোলনী বাঙালী পাড়ায় গিয়ে শহীদ মোহাম্মদ আলীর ছেলে আব্দুর রহিমের হাতে একটি লেপ তুলে দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সুনামসহ অন্যান্য নেতাকর্মীগণ।
এসময় ব্যারিস্টার নুর উস সাদিক জানতে পারেন, শহীদ মোহাম্মদ আলীর নাতনী তাসলিমা আখতার রিমা অনেক কষ্টে এবছর ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে স্নাতকে ভর্তি হয়েছে এবং তার দরিদ্র বাবা আব্দুর রহিম সামান্য যে আয় রোজগার করে তাতে সংসারের খরচ চালাতেই হিমসিম খেতে হয়। সেখানে মেয়ের খরচ চালানো অনিশ্চিত অবস্থায় পড়েছে। একথা শুনে তাসলিমার পড়ালেখার প্রয়োজনীয় খরচ চালানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এসময় আব্দুর রহিম খুশিতে আবেগাপ্লুত হন এবং ব্যারিস্টার নুর উস সাদিক চৌধুরীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি তীব্র এই শীতে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে খুবই কষ্ট পাচ্ছিলেন। ব্যারিস্টার সাদিক তাকে লেপ দেওয়ায় এবং তার মেয়ের পড়ালেখার খরচ চালানোর দায়ীত্ব নেওয়ায় তাদের উপকার হয়েছে।
এসময় আব্দুর রহিম দুঃখ্য প্রকাশ করে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে ২৭শে মার্চ তাঁর বাবা মোহাম্মদ আলী পাকিস্তানী বিরোধী মিছিলে গিয়ে খান সেনাদের সামনে পড়লেও পালিয়ে না গিয়ে বীরদর্পে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে জয়বাংলা শ্লোগান দিয়েছিলেন। আর সেই কারণে খান সেনারা সরাসরি তার বাবাকে গুলি করে হত্যা করেছিল। এই ঘটনার পর পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ের আন্দোলন বেগবান হয়েছিল। পরবর্তীতে স্বাধীনতা লাভের পর তার বাবার সম্মানে তাঁর নামে সড়ক ও স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়। বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসে সর্বস্তরের মানুষ তাঁর বাবা শহীদ মোহাম্মদ আলীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রন্ধাঞ্জলি জানান এবং এজন্য গর্ভে তাদের বুক ভরে যায়। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য তার বাবা মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম শহীদ হলেও আজ পর্যন্ত তাদের পরিবারকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ভরণ পোষণের জন্য আজ পর্যন্ত তাদের পরিবার সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা পায়নি। খেয়ে না খেয়ে তাদের দিন কাটলেও সরকারের কেউ কোনদিন তাদের খোঁজ খবর নেয়নি। এমনকি বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে যে অনুষ্ঠানে সম্মান জানানো হয় তাদের পরিবারকে সে অনুষ্ঠান থেকে কোন এসময় তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এজন্য তারা মনের কষ্ট মনের মধ্যে লালন করছেন।
এর আগে ডেপুটি অ্যাটর্নী জেনারেল ব্যারিস্টার নুর উস সাদিক চৌধুরী ঠাকুরগাঁওয়ের ভূল্লী থানার বালিয়া এম.সি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দুই শতাধিক দুস্থ, অসহায় ও নিম্ন আয়ের শীতার্ত মানুষেরদের মাঝে শীতবস্ত্র হিসেবে লেপ বিতরণ করেন।
আব্দুর রহিমের মুখে ব্যারিস্টার নুর উস সাদিক চৌধুরী এসব কথা শুনে দুঃখ্য প্রকাশ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম শহীদ মোহাম্মদ আলীর পরিবারের এত কষ্টের কথা আমার জানা ছিলনা এবং প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিল না। আমি আইনের সেবক আমি চেষ্টা করবো এই পরিবারকে সরকারি ভাবে শহীদ পরিবার হিসেবে স্বীকৃতি পেতে আদালতের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়ার জন্য। এজন্য সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।

You may also like