স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঠাকুরগাঁওয়ে ডাকাত দলের ৪ সক্রিয় সদস্য, ২ মাদ্রাসা ছাত্রী অপহরনের মামলায় ১ জন ও একজন ভুয়া সিআইডি গ্রেফতার বিষয়ে জেলা পুলিশের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অ্যাপস) মো: আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিথুন সরকার, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলীসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ।
পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক জানান, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের গোয়ালপাড়া এলাকার জামিয়াতুল ইসলাহ আলা নাহজিব সাহাবিয়া (রা:) বালিকা মাদ্রাসার ২ ছাত্রী নিখোজ হয়। পরে এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরী করা হয়। তারই সুত্র ধরে সদর থানার এসআই (নি:) মো: এহসানুল কবিরের নেতৃত্বে একটি টিম গাজীপুরের কাশিমপুর থানার সাদরাগঞ্জ এলাকার একটি ফ্যামিলি মেস থেকে ওই ২ ছাত্রীকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রংপুর জেলার কাউনিয়া থানার কাজীপাড়া গ্রামের মো: মফিজ উদ্দীনের ছেলে মো: এরশাদ মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর মাদ্রাসায় উল্লেখিত ২ ছাত্রীর খোজ না পেলে ঘটনার পরদিন উভয়ের পরিবার থেকে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় ৭৪৫ ও ৯৬৫ নাম্বার পৃথক সাধারণ ডায়েরী করা হয়। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই (নি:) মো: এহসানুল কবির, এএসআই (নি:) মালেক, মো: আব্দুল মমিনসহ একটি টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় উদ্ধার কাজ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কাশিমপুর থানার সাদরাগঞ্জ এলাকার ওই মেস থেকে এরশাদ মিয়াকে গ্রেফতার করে ওই ২ ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।
অপরদিকে সদর থানা পুলিশের অভিযানে ডাকাত দলের ৪ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন সদর উপজেলার আরাজি পস্তমপুর গ্রামের দোলোয়ার হোসেনের ছেলে বিপুল ইসলাম (২৪), হরিনারায়নপুর (গোয়াপাড়া) এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩০), বেলতলা গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে মো: আনারুল (২৭) ও একই গ্রামের মো: রাজুর ছেলৈ হারুন ইসলাম। গ্রেফতারকৃতরা শুক্রবার মধ্যরতে ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ গামী পুরাতন বিমানবন্দরের আর্মি ক্যাম্পের পূর্ব দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে রাস্তার উপর কলার গাছ দিয়ে ব্যারিকেট তৈরী করে রাখে। বিষয়টি পুলিশ জানার পর ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়াও ভুয়া সিআইডি পরিচয় প্রদানকারী পৌর শহরের মুন্সিপাড়ার একটি বাড়ি হতে মো: পলাশ ওরফে মাসুদ রানা (৩৬) কে গ্রেফতার করা হয়। পলাশ ওরফে মাসুদ রানা প্রতারণার মাধ্যমে নারী নির্যাতন মামলার আসামীর তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য রাণীশংকৈল উপজেলার পাটাগড়া গ্রামের মৃত সাবুলের ছেলে মো: লুৎফর রহমানের কাছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ইতোপূর্বের একটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার শুনানীতে বাতিল না করে লুৎফর রহমানের নাম থাকায় তার সাথে প্রতারণার বিষয়টি টের পান। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের মুন্সিপাড়া মহল্লার একটি লুৎফর রহমানকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে একটি বাড়িতে বাক-বিতন্ডা চলাকালীন স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে সিআইডি পরিচয়ে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পরে। এ ঘটনায় লুৎফর রহমান বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেছেন।