লোকায়ন ডেস্ক:
কয়েক ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরে এসে ঢাকা মাতিয়ে গেলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। দশ বছরেরও বেশি সময় পর মালয়েশিয়ার কোনো সরকারপ্রধান ঢাকায় এলেন। আনোয়ার ইব্রাহিমের এই সফরটি সংক্ষিপ্ত হলেও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণে এটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। একান্ত বৈঠকে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দুই দেশের সরকারপ্রধানই।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। এ সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরেই তাদের মধ্যে এক দফা সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়। পরে বিকেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে হয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যাত্রা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের প্রায় দুই মাস সময়ে এটাই বিদেশি কোনো সরকারপ্রধানের প্রথম বাংলাদেশ সফর। ২০১৩ সালের পর মালয়েশিয়ার কোনো সরকারপ্রধানও প্রথম বাংলাদেশ সফর করলেন।
মূলত আনোয়ার ইব্রাহিমের পুরনো বন্ধু ড. ইউনূস। বন্ধুর আমন্ত্রণে ঢাকায় আসেন তিনি। পুরনো বন্ধুকে স্বাগত জানাতে পেরে ড. ইউনূস খুবই খুশি বলে জানিয়েছেন।
৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্য ও বিনিয়োগমন্ত্রী, পরিবহন উপমন্ত্রী, ধর্ম উপমন্ত্রী, দুজন সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন। বিকেলে দুই দেশের সরকারপ্রধান এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, কর্মসংস্থান তৈরি, ভিসা সহজীকরণ এবং উচ্চশিক্ষা, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠক শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আনোয়ার ইব্রাহিম যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া হবে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কর্মীদের দুই দেশের অর্থনীতিতে অবদান গুরুত্বপূর্ণ। টিকিট জটিলতায় মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা ১৮ হাজার শ্রমিককে সব সহায়তা দেওয়া হবে। এই অঞ্চলকে শান্তিপূর্ণ দেখতে আসিয়ানকে আরও কার্যকর করতে চায় মালয়েশিয়া।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে জানিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং সর্বাত্মক সহযোগী থাকবে।
এর আগে দুপুর দুইটার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।