হবিগঞ্জের শিম ভান্ডার খ্যাত নবীগঞ্জ পাহাড়ি এলাকার মহাসড়কের দুই পাশের বিস্তীর্ণ মাঠে শিমের চাষ করা হয়। যে দিকে তাকানো যায় সেদিকেই সাদা-বেগুনী রংয়ের শিম ফুলে প্রকৃতি যেন মিলে মিশে একাকার। শীত মৌসুমের শুরুতে মনোরম শিমের ফুলে ভরে উঠেছে মাঠ-ঘাট, খাল-বিল ও ঘরের ছাল পুকুরের পাড়। শিম মূলত শীতকালীন সবজি। নবীগঞ্জে প্রতি বারের মতো এবারও শীতে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। চারিদিকে শুধু শিম আর শিম।
উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের কৃষক রেজাউল হক জানান, ছোটবেলায় দেখেছি শিম লাগানো হতো ভিটে বাড়িতে। জমিতে হতো ধান। এখন চাহিদা বেড়েছে, ফলনও বেড়েছে তাই শিম চাষ করতে জমি, ভিটা, রাস্তাঘাট, খাল কিছুই বাদ নেই। যার যেখানে জমি ফাঁকা আছে শিম গাছ লাগিয়েছে। বর্তমানে শিমের উন্নত জাতের উদ্ভাবনের কারণে, এখন কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই শিম চাষ করা যাচ্ছে। তাই সকলে শিম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষক মো. আয়াছ মিয়ার, স্ত্রী বলেন, এবার শিমের ভালো ফলন হয়েছে স্বামীর সাথে শিম উত্তলন ও পরিচর্যা কাজ করছি।
একই ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, শিম চাষ করে আমরা লাভবান হওয়ার আশা করছি। যেভাবে ফলন এসেছে তাতে সকল খরচ করে দেড় থেকে ২-৩লাখ টাকার মতো লাভ হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি। শিম চাষিরা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গোটা উপজেলা জুড়ে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। শিম চাষ করে আমরা লাভবান হয়েছি।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ ফজলুল হক মনির বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শিম চাষ খুব ভালো হয়েছে। কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।
শিম উৎপাদন করতে কম পরিশ্রম ও কম খরচে বেশি লাভবান হওয়া যায়। উপজেলা কৃষি অফিস শিম চাষিদের বিভিন্ন সময় এসব ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকে। হবিগঞ্জের শিমের কদর সারা দেশ জুড়ে রয়েছে। কৃষকরা যাতে শিমের ন্যায্য মূল্য পায়, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক রয়েছি। তিনি আরো বলেন, দেশে পঞ্চাশটিরও বেশি স্থানীয় শিমের জাত আছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বাইনতারা, হাতিকান, চ্যাপ্টা শিম, ধলা শিম, পুটি শিম,বারি শিম ১, বারি শিম ২, বিইউপিএফ শিম ৩, ইপসা শিম ১, ইপসা শিম আইরেট ইত্যাদি আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাত। এর প্রায় সবগুলোই হবিগঞ্জে আবাদ হয়।