৮৩
নুর হাসান, পঞ্চগড়: সারিবদ্ধ গাছে গাছে ঝুলছে মাল্টা। প্রতিটি গাছে এতোবেশি মাল্টা ধরেছে যে ফলের ভারে গাছের ডালগুলো মাটির দিকে নুয়ে পড়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার কৃষি নির্ভর ইউনিয়ন চেংঠীহাজরা ডাংগায় এমন চিত্রই চোখে পড়ে।এখানকার অধিকাংশ মানুষের জীবিকা কৃষি কাজের ওপর নিভর্রশীল। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে এখানে চাষ হচ্ছে মাল্টা। অল্প টাকা আর কম শ্রমে বেশি লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকায় এই ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের মাধ্যমে এখানকার কৃষকদের বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে গাছের চারা, সার, কীটনাশক এবং ওষুধ। চাষ শুরুর কয়েক মাস আগে থেকে মাল্টা চাষের ওপরে দেওয়া হয়েছে ট্রেনিং। ২০১৮ সালে চেংঠীহাজরা ডাংগায় ২ হেক্টর জমিতে বারি মাল্টা-১ আবাদ হতো বর্তমানে তা বেড়ে ৩৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে।
মাল্টা চাষের ওপরে ট্রেনিং নিয়ে চাষ শুরু করেন লাজু ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ২০২১ সালে দুইশ শতক জমিতে ৬৫৫ টি মাল্টার গাছ রোপন করি। ২০২৩ সালে প্রথম ফল বিক্রি করি দেড় লাখ টাকায়। এবার প্রতিটি গাছে, ৩০০ থেকে ৪০০ পর্যন্ত ফল ধরেছে। এবার পাইকাররা বাগান থেকেই পাঁচ লাখ বিশ হাজার টাকা দাম করে। আমরা দেই নাই। আমরা সরাসরি ঢাকা গিয়ে বিক্রি করবো, সেখানে ভালো দাম পাবো আশা করি।
তার এই মাল্টা বাগানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে কয়েকজন কৃষি শ্রমিকের। শ্রমিক মিষ্টার আলী জানান, তারা ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিক মাল্টা বাগানে কাজ করেন। কাজ করে যে টাকা পায় সে টাকা দিয়ে তাদের সংসার ভালো চলে।
শ্রমিক সোলেমান আলী জানান, বাড়ির পাশে মাল্টা বাগান হওয়ার কারণে কাজ করতে অনেক সুবিধা হয়। প্রতিদিন আমাদের পাঁচশত টাকা হাজিরা দেয়। কাজ শেষে বাগান থেকে গরু, ছাগলের জন্যও ঘাস নিয়ে যাওয়া যায়।
দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাঈম মোর্শেদ জানান, দেবীগঞ্জ উপজেলার মাটি মাল্টা চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত। দেবীগঞ্জের চেংঠীহাজরা ডাংগা গ্রামকে আমরা মাল্টা গ্রাম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছি। কারণ ২০১৮ সালে চেংঠীহাজরা ডাংগায় ২ হেক্টর জমিতে বারি মাল্টা-১ আবাদ হতো বর্তমানে তা বেড়ে ৩৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে। এবার উপজেলায় ৬২ হেক্টর জমিতে মালটা চাষ হচ্ছে। আমরা কৃষকদের মাল্টা চাষের উপরে ট্রেনিং দিয়েছি। এছাড়াও তাদেরকে চারা, সার, কীটনাশক, স্প্রে মেশিন বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে।