প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৫, ২০২৪, ৩:৫১ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ১৫, ২০২৪, ৪:০৩ পূর্বাহ্ণ
পঞ্চগড়ে সুপারির খোল দিয়ে তৈরি হচ্ছে আকর্ষণীয় প্লেট, বাটি, চামুচ
মো. নুর হাসান, পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে সুপারি গাছের ঝরে পড়া পাতার খোল দিয়ে ওয়ানটাইম প্লেট, বাটি, চামুচসহ তৈজসপত্র তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন উদ্যোক্তা নুরল আলম সেলিম।
স্বাস্থ্যকর হওয়ায় বাজারে অন্যান্য প্লেটের তুলনায় এগুলোর চাহিদাও বেশি। সুপারি গাছের খোল গ্রামে খুবই সহজলভ্য। সাধারণত জ্বালানি হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। তবে এই খোল দিয়েই প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার শিমুলতলীতে নান্দনিক তৈজসপত্র তৈরি করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রথমে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ২ টাকা পিস করে সুপারি গাছের খোল সংগ্রহ করা হয়। খোলগুলোকে নিমপাতা ও লেবুর রস যুক্ত পানি দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে রোদে শুকিয়ে নেয়া হয়। এরপর পাতার খোল ছাঁচের মেশিনে বসিয়ে তাপ এবং চাপ প্রয়োগ করে নানা আকৃতি দেয়া হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই গোলাকার বাটি, গোলাকার প্লেইট, চৌকোণা প্লেট, লাভ প্লেট, চামুস, ট্রেসহ ৮ ধরনের জিনিস প্রস্তুত করা হচ্ছে।
বর্তমানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, রেষ্টুরেন্ট, দোকানে প্লাস্টিকের পরিবর্তে সুপারি গাছের খোল দিয়ে তৈরি জিনিসের ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান এর প্রস্ততকারকরা।
গত বছরের অক্টোবর মাসে শুরু হওয়া এ কারখানায় দৈনিক ১০০০-১২০০ পিস প্লেট, বাটিসহ ৮ ধরনের তৈজসপত্র উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি পিস প্লেট, বাটি ৭-১৫ টাকায় বিক্রি করা হয়।
স্থানীয় সুপারি বাগানের মালিক হাসিবুল জানান, তার প্রায় এক একর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে। আগে সুপারির বাগানের পাতা পড়ে গিয়ে নিচেই নষ্ট হতো। কিন্তু এখন কারখানা হওয়ায় ঝরে পড়া সুপারির খোলের মূল্য হয়েছে।
কারখানার শ্রমিক কাবলু জানান, কারখানাটি হওয়ায় তার মতো অনেকের চাকরি হয়েছে। এমন কারখানা জেলায় আরও হলে অনেক বেকারের কাজের সুযোগ হবে।
ইকো বিডি গ্রীণের পরিচালক ফরিদুল আলম হিরু বলেন, আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্ল্যাস্টিকের প্লেট ব্যবহার করে থাকি, যেগুলো ঠিকমতো ধরাও যায় না। দেখা যায়, খাবার পড়ে যায়। কিন্তু তার তুলনায় আমাদের বানানো প্লেটগুলো শক্ত, সুন্দর ও সহজে পরিবহনযোগ্য। সবচেয়ে ভালো দিক হলো এটি ব্যবহারের পর ফেলে দিলে এটি পঁচে জৈবসার হয়। প্লাস্টিকের থেকে দাম একটু বেশি হলেও পরিবেশ সুরক্ষায় এর বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।
বোদা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির জানান, এটা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। সুপারির খোল দিয়ে তৈরি তৈজসপত্রের দেশ ছাড়া বিদেশেও চাহিদা রয়েছে। এসব পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।
স্বত্ব © ২০২৪ দৈনিক লোকায়ন