লোকায়ন ডেস্ক: ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ সিরিজই বন্ধ আছে প্রায় এক যুগ ধরে। ভারত এবং পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলছে না লম্বা সময় ধরে। দুই দলের মুখোমুখি হওয়ার উপলক্ষ্য কেবল আইসিসি ও এসিসির সূচিতেই আটকে আছে। রাজনৈতিক কারণে পাকিস্তান সফরে করেনি ভারত। আর পাকিস্তানও নিজের জায়গায় পুরোপুরি অনড়। ভারত না এলে, তারাও যেতে নারাজ।
তবে এই বহুল প্রতীক্ষিত সিরিজ এখন নাকি কেবল সময়ের অপেক্ষা। দ্বিপাক্ষীক সিরিজের জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও রাজি। এমন দাবি করেছেন স্বয়ং পিসিবি চেয়ারম্যান জাকা আশরাফের। পিসিবি কর্তার ভাষ্য, শুধু একটি সমস্যার জন্য আটকে রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন।
উল্লেখ্য, ২০১২-১৩ মওসুমের পর দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজ খেলেনি ভারত-পাকিস্তান। গত এক দশক ধরে ২২ গজে দু’দেশের ক্রিকেটারেরা মুখোমুখি হয়েছেন শুধু ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এবং এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বহু দলীয় প্রতিযোগিতায়। এমনকি, বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে পাঠাতেও আপত্তি রয়েছে ভারতের।
গত সেপ্টেম্বরে ভারতের আপত্তির মুখেই এশিয়া কাপের অধিকাংশ ম্যাচ আয়োজন করতে পারেনি পাকিস্তান। ভারত দল পাঠাতে রাজি না হওয়ায় প্রতিযোগিতার নয় ম্যাচ হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। তবে সে সময় থেকেই দুই দেশের ক্রিকেট কর্তারা সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে আসছেন । আর তার সুবাদেই এমন অবস্থান।
জাকা আশরাফ বলছেন, ‘‘ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজে রাজি দু’দেশের ক্রিকেট বোর্ডই। অপেক্ষা শুধু দু’দেশের সরকারের অনুমতির।’’ সেই অনুমতি কবে পাওয়া যাবে, তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে পারেননি পাক ক্রিকেটের শীর্ষকর্তা। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন আশরাফ। পিসিবি প্রধানের এই মন্তব্যের প্রক্ষিতে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি বিসিসিআই।
মূলত গত এক দশকের বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক কারণে বন্ধ ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট সিরিজ। সন্ত্রাসবাদের প্রতিবাদে পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেট সম্পর্ক স্থগিত রেখেছে ভারত। গত এশিয়া কাপের সময়ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী এবং বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি অনুরাগ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ না করলে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হবে না। এ ব্যাপারে আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিসিআই। সেই অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি।’
পিসিবি প্রধান দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ থাকার কারণ হিসাবে প্রশাসনিক কথাই বলেছেন। যদিও সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে দু’দেশের সরকারের অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি। এ নিয়ে সুর নরম করতে রাজি নয় নয়াদিল্লি। শেষ পর্যন্ত জাকা আশরাফের এই মন্তব্য ঠিক কতটা আশা জাগাতে পারে, সেটাই দেখার অপেক্ষা।