লোকায়ন ডেস্ক: শেষ ওভারে প্রয়োজন ২৯ রান। বোলিংয়ে সাকিব আল হাসান। ক্রিজে থাকা তাওহীদ হৃদয় ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট। আমের জামাল ক্রিজে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম কেঁপে ওঠে সাকিব-সাকিব ধ্বনিতে।
জামালের পর জাকের আলী এসে দুই ছক্কা মারলেও হার ঠেকাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয় পায় রংপুর রাইডার্স।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) টস জিতে ব্যাটিং নেয় রংপুর। নির্ধারিত ওভার শেষে ৫ উইকেটে ১৬৫ রান করে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। তাড়া করতে নেমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৬ উইকেটে ১৫৭ রান করে থামে। ৮ রানের জয়ে মাঠ ছাড়ে রংপুর।
এই নিয়ে পঞ্চম ম্যাচে এসে ৩ জয় পেয়েছে নুরুল হাসান সোহানের দল। অন্যদিকে কুমিল্লার সমান ম্যাচে তৃতীয় হার।
তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারে লিটন দাসের উইকেট হারায় কুমিল্লা। মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গী হন ইমরুলের কায়েসের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। তাকে নিয়ে এগোতে থাকেন রিজওয়ান। দুজনে দলের হাল ধরেন, তবে ধীরগতিতে।
প্রয়োজনীয় রান রেট অনুযায়ী দুজনে খেলতে পারেননি। রিজওয়ান ২১ বলে ১৭ রান করে সাজঘরে ফিরলে অঙ্কনের সঙ্গী হন তাওহীদ হৃদয়। আগের ম্যাচগুলোতে রান না পাওয়া হৃদয় সতীর্থ অঙ্কনের সঙ্গে জুটি গড়ে দারুণ খেলতে থাকেন। দুজনের জুটি থেকে আসে ৪০ বলে ৫৩ রান।
অঙ্কন ৫৫ বলে ৬৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ক্রিজে থিতু হয়েও তিনি ম্যাচ বের করে আসতে পারেননি। উল্টো প্রায় অর্ধেক ওভার শেষ করা এই ব্যাটারের কারণে দল আরও চাপে পড়ে। অঙ্কন ফিরলে ক্রিজে এসে খুশদিল শাহ চড়াও হন। আজতুল্লাহ ওমরজাইকে ওভারে দুই ছক্কা মেরে আভাস দেন নাটকীয় কিছুর। কিন্তু আবার মারতে গিয়ে ৮ বলে ১৩ করে সাজঘরে ফেরেন খুশদিল। শেষ পর্যন্ত হৃদয় ক্রিজে থাকলেও ম্যাচ জিতিয়ে আসতে পারেননি। শেষ ওভারে ভুল বোঝাবোঝতি আউট হন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ২৮ বলে ৩৯ রান।
রংপুরের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই। তার অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রংপুর। বোলিংয়ের আগে ব্যাট হাতে ২০ বলে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। তিন ছক্কা ও দুই চারে অপরাজিত ইনিংসটি সাজানো ছিল। আজমতুল্লাহর সঙ্গে নুরুল হাসান সোহান ৬ বলে ১৫ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন। ৪১ রানে ১ উইকেট পাওয়া সাকিব ব্যাটিংয়ে নামেননি এই ম্যাচেও।
রংপুর অবশ্য আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই ব্রেন্ডন কিংয়ের উইকেট হারায়। ১২ বলে ১৪ রান করেন কিং। এরপর রানি তালুকদারের পরিবর্তে খেলা ফজলে মাহমুদ রাব্বিকে নিয়ে এগোতে থাকেন বাবর আজম। বাবর ধীরগতির ইনিংস খেললেও রাব্বি ঝড় তোলার চেষ্টা করেন।
বাবর-রাব্বির জুটি থেকে আসে ৪৬ বলে ৫৫ রান। ৩৬ বলে ৩৭ রানে বাবরের আউটে ভাঙে এই জুটি। ক্রিজে আসেন শামীম পাটোয়ারি। এক প্রান্তে শামীমের ধীরগতির ইনিংস রংপুরকে চাপে ফেলে দেয়। অন্যপ্রান্তে রাব্বি ২০ বলে ৩০ রান করে সাজঘরে ফেরেন। শামীম ১৮ বলে ১৪ রান করে আউট হন।
শামীমের পর ক্রিজে এসে মোহাম্মদ নবী আজমতুল্লাহকে সঙ্গ দেন। নবী ৭ বলে ১৩ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নিলে আজমত-সোহান ইনিংস শেষ করে আসেন।
কুমিল্লার হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন রেমন রেইফার। ১টি করে উইকেট নেন তানভীর ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান ও খুশদিল শাহ। সবচেয়ে খরুচে ছিলেন মোস্তাফিজ। তিনি ৪ ওভারে দেন ৪৮ রান। অথচ তার শুরুটা হয়েছিল দারুণ। প্রথম ২ ওভারে ৯ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট! আর পরের ২ ওভারে তিন ছক্কা তিন চার হজম করে দেন বাকি রান।