Home » শুরু হলো রানীশংকৈলে প্রাচীন গোরক্ষনাথ মেলা

শুরু হলো রানীশংকৈলে প্রাচীন গোরক্ষনাথ মেলা

by নিউজ ডেস্ক

লোকায়ন ডেস্ক রিপোর্ট:
গতকাল ০৯ মার্চ শনিবার ফাল্গুনের শিব চতুর্দশী তিথীতে শুরু হলো গোরক্ষনাথ (গোরকই) মেলা। মেলাটি চলবে আগামী ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার দেড়’শ বছরের পুরাতন গোরক্ষনাথ মন্দির এ অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে গোরকই একটি তীর্থ স্থান। মন্দির এলাকায় অবস্থিত বৈচিত্রময় প্রস্তর নির্মিত আশ্চর্য কূপ ও কুপটির জল মহা পবিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। প্রতিবছর এ মহাপবিত্র কূপের পানিতে স্নান করে পবিত্র হওয়ার জন্য এখানে হাজার হাজার নর-নারীর আগমন ঘটে।


এ জেলার রানীশংকৈল উপজেলার ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থান নেকমরদ বাজার হতে পশ্চিমে ৫ কিলোমিটার দূরে ‘গোরকই’ নামক স্থানে গোরক্ষনাথ মন্দির অবস্থিত। এখানে রয়েছে গোরক্ষনাথ মন্দির ছাড়াও নাথ আশ্রম। গোরক্ষনাথ মন্দির স্থানীয়ভাবে গোরকই মন্দির নামে পরিচিত। মন্দিরটির চত্বরে আরো পাঁচটি মন্দির দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে। এ ছাড়াও আছে ৩টি শিবমন্দির ও ১টি কালি মন্দির, ১টি দুর্গা মাতা মন্দির। নাথ মন্দিরটি চত্বরের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত। মন্দিরের পেছনে একটি বৈচিত্রময় কূপ রয়েছে। পাথর দিয়ে তৈরী একটি ছোট চৌবাচ্চার মাঝে নীচু স্থানে ওই কূপটি অবস্থিত। গোরকই কুপটি সম্পূর্ণ বেলে পাথর দ্বারা নির্মিত। এ কূপের একেবারে নীচু অংশটুকু পর্যন্ত পাথর দিয়ে বাঁধানো রয়েছে। কথিত আছে গুপ্ত যুগ থেকে সেন যুগের মধ্যেই কুপ ও মন্দির নিমির্ত হয়েছিল এবং নাথ সহজিয়া মতের গুরু গোরক্ষনাথের নামানুসারে কুপের ও স্থানের নাম হয়েছে গোরকই। ‘গরকই’ ফকিরি স্থান বা বারুনীর মেলা হিসেবে আজরও সমানভাবে সমাদৃত।


প্রতিবছর ফাল্গুন মাসে এই কূপের পানিতে স্নান উপলক্ষে শিবযাত্রী মেলা বসে। উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার হিন্দু-নরনারী পূণ্য লাভের জন্য কুপের পানি দিয়ে স্নানেন উদ্দেশ্যে এখানে আসে। কূপের পূর্ব দিকে একটি দরজা ও পশ্চিম দিকে একটি দরজা রয়েছে। ওই দরজা দিয়ে আগত তীর্থযাত্রীরা কুপের পানি নিয়ে স্নান করে থাকে। পুরষদের পাশাপাশি নারীরাও পূণ্য লাভের জন্য এ কুপের পানিতে স্নান করে থাকে। হাজার হাজার নর-নারী স্নান করার পরেও এ কূপের পানি কমে না।
গোরকই মন্দিরের সভাপতি কাশিনাথ দাসাধিকারী এবং সাধারন সম্পাদক অনন্ত কুমার রায় জানান, গোরকই মন্দিরে প্রতিবছর শিবপূজা অনুষ্ঠিত হয় এবং মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাটি চলবে আগামী ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। সরকারি ভাবে তেমন অনুদান না পাওয়ার কারণে মন্দিরটি সংস্কার করা যাচ্ছে না। স্থানীয় মানুষের চাঁদা দিয়ে মন্দিরের রং করা এবং আনুসাঙ্গিক খরচ বহন করা হয়।

You may also like