Home » জিরা পানি খেলে মিলবে যে ১০ উপকার

জিরা পানি খেলে মিলবে যে ১০ উপকার

by অনলাইন ডেস্ক

আমাদের রান্নাঘরের বয়ামে জিরা পাওয়া যায় সবসময়ই। মসলা হিসেবে বহুল ব্যবহৃত জিরার কিন্তু রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতাও। জিরা সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন ছেঁকে পানি খান। আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে যুগের পর যুগ ধরে এই পানীয় ব্যবহার করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিকভাবেও জিরার গুণের কথা প্রমাণিত হয়েছে বহুবার। একশ গ্রাম জিরায় ৩৭৫ ক্যালোরি থাকে। এছাড়া এতে ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, সোডিয়াম, পটাশিয়ামসহ বেশি কিছু ভিটামিনও থাকে। প্রতিদিন মাত্র এক গ্লাস জিরা পানি খেলে দূরে থাকতে পারবেন বিভিন্ন রোগ থেকে। জেনে নিন জিরা পানির কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।

১। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
জিরা পটাশিয়াম এবং আয়রনের খুব ভালো উৎস যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ জিরায় রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। সংক্রমণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে জিরা। এতে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি উপকারী খনিজ পদার্থ এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি এবং সি রয়েছে যা সংক্রমণ প্রতিরোধে অত্যন্ত সহায়ক।

২। প্রদাহ কমায়
জিরা পানিতে থাইমোকুইনোন নামক একটি শক্তিশালী রাসায়নিক যৌগ রয়েছে যা লিভারকে প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। এছাড়া লিভার সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এটি। জিরার প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য পেট ব্যথার মতো ব্যথা কমাতেও সহায়তা করে।

৩। বিপাক বাড়ায় এবং হজমে সহায়তা করে
জিরার পানি অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি হজমের উন্নতিতেও সাহায্য করে। কার্বোহাইড্রেট, গ্লুকোজ এবং চর্বি দূর করতে পারে এমন এনজাইমগুলোর মতো যৌগ নিঃসরণ করতে সাহায্য করে জিরা, যা বিপাককে উন্নত করে। এটি লিভারে বাইল অ্যাসিড তৈরির প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং চর্বি হজম করতে সাহায্য করে। জিরা পানি বদহজম এবং অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

৪। বলিরেখা পড়তে দেয় না ত্বকে
জিরা পানি ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং সেলেনিয়ামের মতো খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ যা ত্বকের পুনরুজ্জীবনে সহায়তা করে। ত্বক ভেতর থেকে হয় উজ্জ্বল ও সুন্দর। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই রয়েছে যা ত্বকের অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধ করে। নিয়মিত এক গ্লাস জিরা পানি খেলে ত্বকে বলিরেখা দেরিতে পড়বে।

৫। ব্রণ থেকে দূরে রাখে
জিরার অনেকগুলো অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে। ফ্রি র‌্যাডিক্যালের বিরুদ্ধেও লড়াই করে জিরায় থাকা উপকারী বিভিন্ন উপাদান। ফ্রি র‌্যাডিক্যালে হচ্ছে টক্সিন যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে এবং ত্বকের প্রোটিন ভেঙে দেয়। ফলে ত্বকে দাগ দেখা দেয় ও ত্বকের জৌলুস হারায়। জিরা ডায়েটারি ফাইবার হওয়ায় আমাদের শরীর থেকে এই টক্সিনগুলো সহজেই দূর করে।

৬। চুল ভালো রাখে
জিরায় প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়া চুলের গোড়া সুস্থ রেখে চুল পড়াও রোধ করে। জিরা পানি দিয়ে চুল ধুলে চুল হয় ঝলমলে।

৭। হৃদরোগ থেকে দূরে রাখে
জিরা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কার্ডিয়াক সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসায় খুবই সহায়ক। জিরার পানি হার্টের পেশীকে শক্তিশালী করতে ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে উপকারী। এতে হার্ট ব্লক, হার্ট অ্যাটাক এবং রক্ত ​​জমাট বাঁধার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।

৮। হাড় মজবুত রাখে
শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলে হাড়ের ক্ষয় হয়। জিরায় ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই হাড় মজবুত রাখতে জিরা ভালো ভূমিকা রাখে।

৯। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে
জিরার পানি শরীরে ইনসুলিনের উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে। এটি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সহায়ক কারণ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে জিরা। গ্লাইকোসিলেট হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও হ্রাস করতে সক্ষম উপাদানটি।

১০। রক্তশূন্যতা দূর করে
জিরা আয়রন সমৃদ্ধ, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয়। হিমোগ্লোবি আমাদের সারা শরীরে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য অপরিহার্য। কম হিমোগ্লোবিনের মাত্রার কারণে রক্তাল্পতার অনেক উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

জেনে নিন

জিরা পানি তৈরির জন্য কাঁচা ও আস্ত জিরা বেছে নিন। কারণ জিরা ভেজে নিলে কিছু পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
কুসুম গরম পানিতে জিরা ভিজিয়ে খেলে প্রদাহ কমে।
বিপাক বাড়াতে এবং অতিরিক্ত ক্যালোরি পোড়াতে চাইলে জিরা পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে নিন।
জিরা ও মেথি একসঙ্গে ভিজিয়ে রেখে পানি খেলে হজমের সমস্যা দূর হবে।
অতিরিক্ত জিরা পানি খাবেন না। এতে নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে।
তথ্যসূত্র: ফেমিনা

You may also like