২২৭
মো. নুর হাসান, পঞ্চগড়: করোনাকালীন সময় নিজের শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী ছেলের অপারেশনের পর থেরাপি দিতে না পেরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য নিজেই থেরাপি প্রি-স্কুল গড়ে তুলেছেন শাহরিয়ার সম্পা ও মোশিউর রহিম নামে এক শিক্ষক দম্পতি। এ কাজের জন্য এখন প্রশংসা পাচ্ছেন স্থানীয়দের।
শাহরিয়ার সম্পা পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের প্রভাষক এবং মোশিউর রহিম দেবীগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রভাষক।
এই শিক্ষক দম্পত্তির তিন ছেলে। তার মধ্যে প্রথম দুই ছেলে জমজ জন্মগ্রহণ করেন, সেসময় এক ছেলে শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী হিসেবে জন্মগ্রহণ করে। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মাতৃক নামে এক ছেলে সন্তান শ্রবণ এবং বাক প্রতিবন্ধী জন্মগ্রহণ করে।
২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল মাতৃককে ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সার্জারি করা হয়। সার্জারি করার পরের দিনেই তাদের বড় সন্তান শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী মুকিত দেবীগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। সার্জারি করার পরে তারা বাড়িতে চলে আসেন। এর পর শুরু হয় করোনাকালীন সময়। পরবর্তীতে তারা থেরাপির জন্য করোনার কারণে আর চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যেতে পারেনাই। না যাওয়ার কারণে মাতৃক আর সুস্থ হয়ে উঠেনি।
এর পর এই শিক্ষক দম্পতি নিজেই একটি প্রতিবন্ধী স্কুল খুলে এলাকার প্রতিবন্ধী শিশুদের থেরাপি ও লেখাপড়ার চিন্তা করেন। সেই চিন্তা থেকেই পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের দাদা-নাতি হোটেলের দ্বিতীয় তলায় স্থাপন করেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের স্পেশাল থেরাপি প্রি-স্কুল দেবীগঞ্জ আনন্দ ল্যাব এবং দেবীগঞ্জ থেরাপি ল্যাব।খবর পেয়ে এলাকার শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর অভিভাবকরা তার এ প্রতিষ্ঠানে সন্তানদের ভর্তি করেন।
শাহরিয়ার সম্পা জানান, প্রথমে পাঁচজন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুলটি চালু করা হয়। বর্তমানে ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন দিতে পারছেন না। নিজের শিক্ষকতার বেতনের টাকা দিয়ে শিক্ষকদের বহু কষ্টে বেতন দিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করানো হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা পেলে আরও ভালোভাবে চালাতে পারবেন বলে জানান তিনি।