Home » হাসিনা যেন আর কোন ষড়যন্ত্র করতে না পারে তার দায়িত্ব ভারতের: মির্জা ফখরুল

হাসিনা যেন আর কোন ষড়যন্ত্র করতে না পারে তার দায়িত্ব ভারতের: মির্জা ফখরুল

by নিউজ ডেস্ক
ঠাকুরগাঁও: হাসিনা কোথায় তা আপনারা ভালো জানেন। তার যেখানে জায়গা সেখানে গেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীর বলেছেন, আমরা ভারত সরকারকে বলেছি, আপনারা আমাদের প্রতিবেশি। আমরা কখনোই চাই আপনাদের সাথে খারাপ সম্পর্ক হোক। শেখ হাসিনা আপনাদের ওখানে আশ্রয় নিয়েছে। আপনারা আশ্রয় ‍দিয়েছেন আপনাদের চিন্তা মতো। কিন্তু শেখ হাসিনা ওখান থেকে যেন এই দেশের মানুষের জন্য আবারও কোনো ষড়যন্ত্র না করে। সেটা দেখার দায়িত্ব আপনাদের। ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। আরও ঘনিষ্ঠ হবে যদি এই ভয়াবহ মানবতাবিরোধীকে দেশে ফেরত পাঠাতে আপনারা সহযোগিতা করেন। তাহলে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা বিএনপির আয়োজনে রাণীশংকৈল ডিগ্রী কলেজ মাঠে সম্প্রীতি ও গণতন্ত্র রক্ষায় এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেভাবে হাসিনাকে দেশ থেকে বিদায় করেছে। ফ্যাসিবাদী দলের চিরতরে বিদায় না করা পযন্ত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, যে অন্যায় অপরাধ করবে তাকে জনগণের সামনাসামনি হতে হবে। জনগণই তাদের পাওনা আদায় করে নিবে। যত প্রকার অত্যাচার, নির্যাতন আছে সবই করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। অবশেষে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর আমরা এখন মুক্ত ও স্বাধীন। আমাদের দায়িত্ব স্বাধীনতা রক্ষা করা। নয়তো আবার স্বাধীনতা উড়ে যাবে।

 

সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সংখ্যালঘুরা যাতে আনন্দের সাথে পূজা উদযাপন করতে পারে দিকে নেতাকর্মীকসহ সকলকে লক্ষ্য রাখার কথা জানিয়ে বিএনপির অন্যতম নেতা ফখরুল বলেন, পাড়ায় পাড়ায় ও মন্ডপে মন্ডপে দায়িত্ব পালন করবেন। কোথায় যেন কোন অঘটনা না ঘটে। বাংলাদেশে সাম্প্রাদায়িকতার কোন স্থান নাই। আমাদের মানুষরা ধর্মভীরু। সবাই ধর্ম ভালোবাসে কিন্তু ধর্মে ধর্মে কোনোদিন তারা কোন্দল করেনি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে তা হয়। আমাদের দেশে হয় না।

এছাড়াও নির্বাচন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, নতুন সরকার তো উপযোগী সময়ে নির্বাচন দিবে। নির্বাচন দিলে সে নির্বাচনে আপনারা কাকে ভোট দিবেন? ধানের শীষে। মানুষ কেন ভোট দেবে ধানের শীষে? অতিতে ধানের শীষ যতোবার ক্ষমতায় এসেছে ততবার মানুষের ভালো শাসক হয়েছে। চুরি-চামাড়ি কম ছিল। উন্নয়ন হয়েছে।

আবার যদি আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে গেলে তা ভালো হবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাই নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করা, সবাই যেন ভোট দিতে পারি। অধিকার ফিরে পাই। দেশ যেন সুন্দর ও শান্তিতে থাকে। তার জন্য আপনাদের সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।

খালেদা জিয়ার প্রশংসা করে ফখরুল বলেন, আমাদের দেশ নেত্রী খালেদা জিয়া ৬ বছর জেলে ছিলেন। জেল থেকে বেড় হয়ে হাসপাতল থেকে তিনি একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন আপনাদের উদ্দ্যেশে। বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যখন জেলে ছিলাম। আপনারা আমার জন্য অনেক আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছে। অনেক ত্যাগ শিকার করেছেন অনেকে বুকের রক্ত দিয়েছেন। এখন মুক্ত হয়েছি। আমি চাই এর পর থেকে প্রতিশোধ প্রতিহিংসার কারণে আর কোনো রক্তপাত হোক।, সেজন্য আমরা কোনো প্রতিশোধ নিতে চাই না। একটা শান্তিময় বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

তাছাড়াও গত ২-৩ আগে দেওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান সাহেব বলেছেন এই সরকারকে আমরা সহযোগিতা করতে চাই ও করবো এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ হোক সেটাও আমরা চাই। বাংলাদেশ একটা স্বপ্নের দেশ ও শান্তিময় দেশ হোক। ছেলে মেয়েরা যেন সবাই লেখা পড়া করতে ও দুধেভাতে খেতে পারে। এধরণের একটা বাংলাদেশ আমরা দেখতে চাই। যাদের চাকরি নাই তারা যেন চাকরি পায়। কর্মসংস্থান তৈরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে। এ ধরনের বাংলাদেশ তৈরি করতে পেছনের দিকে না তাকিয়ে তিনি সবাইকে রূখে দাড়াতে ও নতুন দেশ তৈরি করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এসময় রাণীশংকৈল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীনসহ জেলা, উপজেলা ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন। এছাড়াও জনসভায় জেলা ও উপজেলা বিএনপি বিভিন্ন নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার নারী-পুরুষ সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

You may also like