নবীন হাসান : উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে শুরু হয়েছে শীতের আগমন। প্রতিবছরই হিমালয়ের নিকটবর্তী এই অঞ্চলে শীত একটু আগেই অনুভূত হয়, কিন্তু এবছর তা যেন আরও দ্রুত এসেছে। ভোরের আকাশে ঘন কুয়াশার চাদর, দিনের বেলায় উষ্ণ তাপমাত্রা থাকলেও রাত নামলেই হিমেল হাওয়া জানান দিচ্ছে শীতের উপস্থিতি।
শহরের পাশাপাশি গ্রামের পথঘাটেও শীতের আমেজ স্পষ্ট। সকালবেলা হাঁটতে বের হওয়া মানুষদের অনেকেই গায়ে চাদর জড়িয়ে বের হচ্ছেন। রাস্তার পাশের গাছের পাতায় জমে থাকা শিশির বিন্দু এবং মাঠের ফসলের গায়ে শীতের পরশ শীতের আগমনী বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর শীতের আগমন বেশ আগেভাগেই শুরু হয়েছে। অনেকে ইতিমধ্যেই শীতের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক জানান, যেহেতু ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের প্রকোপ টা একটু আগেভাগেই শুরু হয় তাই ব্যবসার প্রস্তুতি নিচ্ছি। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে শীতের পোশাক সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি।
শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে ঠাকুরগাঁওয়ের রাস্তাঘাটেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভোরবেলা সড়কপথে কুয়াশার কারণে যানবাহন চলাচল কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। পরিবহন চালকদের অনেকেই জানান, ভোরের কুয়াশার কারণে তাদের খুব সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়।
ঠাকুরগাঁওয়ের একজন পরিবহন চালক, মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সকালে গাড়ি চালাতে সমস্যায় শুরু হয়েছে। আমাদেরকে অনেক ধীরে এবং সতর্কতার সাথে গাড়ি চালাতে হয়।”
এদিকে, শীতের সময়ে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পায় তাই বয়স্ক ও শিশুদের আগেভাগেই সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রকিবুল আলম চয়ন জানান, “শীতের শুরুতেই সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা ও জ্বরের রোগী বেড়ে যায়। শিশু ও বয়স্কদের প্রতি এই সময়ে বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরিধান এবং শরীর গরম রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে।”
শীতের এই আগমনী আমেজ ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষদের জন্য যেমন স্বস্তিদায়ক, তেমনি কিছুটা চ্যালেঞ্জেরও। শীতের সময় যাতে কোনো সমস্যা তৈরি না হয়, সেজন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, শীতের এই আগমন স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এক ধরনের স্বস্তি এবং আনন্দেরও বটে, কারণ এই সময়ে ঠাকুরগাঁওয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নতুন রূপে সেজে ওঠে।