পার্থের পর মেলবোর্নেও হেরে গেলো পাকিস্তান। এক ম্যাচ হাতে রেখে ২-০ তে এগিয়ে থেকে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ নিশ্চিত করলো অস্ট্রেলিয়া। ফল একই হলেও দুই ম্যাচে পাকিস্তানের পারফরম্যান্সে ছিল পার্থক্য। পার্থে পাকিস্তানের অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছিল। মেলবোর্নে তারা লড়াই করলো কোমর বেঁধে। আর তাই ৭৯ রানে হেরেও গর্বিত দলের টিম ডিরেক্টর ও প্রধান কোচ মোহাম্মদ হাফিজ।
চার দিনেই শেষ হয়ে গেছে মেলবোর্ন টেস্ট। দুই দলই লড়েছে সমানতালে। জয়ের পাল্লা কখনও অস্ট্রেলিয়ার দিকে, আবার কখনও পাকিস্তানের দিকে ভারী ছিল। তবে শেষ আধঘণ্টায় লণ্ডভণ্ড সফরকারীরা। ৩১৭ রানের লক্ষ্যে থেকে সালমান আগা ও মোহাম্মদ রিজওয়ান দারুণ জুটি গড়েন। পাঁচ উইকেট হাতে রেখে দরকার ছিল ৯৮ রান। কিন্তু রিজওয়ান বিতর্কিত কট বিহাইন্ডে মাঠ ছাড়তেই সব ওলটপালট। ৪০ বলের মধ্যে ১৮ রানের ব্যবধানে শেষ পাঁচ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
দুই ইনিংসে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ ফেলে দিয়েছেন আব্দুল্লাহ শফিক, যার খেসারত পাকিস্তানকে দিতে হয়েছে তীব্রভাবে। প্রথম ইনিংসে ২ রানে তার হাত ফসকে জীবন পান ডেভিড ওয়ার্নার। পরে তিনি উসমান খাজার সঙ্গে ওপেনিংয়ে ৯০ রান যোগ করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে আমির জামালের বলে মিচেল মার্শকে জীবন দেন শফিক। ওইসময় অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ৪৬ রান। মার্শ আরও ৭৬ রান করেন এবং স্টিভ স্মিথের সঙ্গে জুটিতে আরও ১২৩ রান যোগ করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি থামেন ৯৬ রান করে।
হাফিজ বললেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম আব্দুল্লাহ ওই জায়গায় স্বস্তিবোধ করছিল না। যখন সময় ভালো যাবে না, তখন একটি দল হিসেবে আপনি সবসময় আপনার সতীর্থকে সমর্থন করবেন। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে সে স্বস্তিতে না থাকলে বাবর স্লিপের ভালো ফিল্ডার, তাহলে কেন আমরা পরিবর্তন আনবো না?’
প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান অতিরিক্ত রান দিয়েছিল ৫২টি। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস লিড নেয় ৫৪ রানের। বলা যায়, অতিরিক্ত রানও হারের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
টিম ডিরেক্টর বললেন, ‘এই ম্যাচে আমরা খুব কাছাকাছি ছিলাম কিন্তু জিততে পারলাম না। আমরা কিছু ভুল করেছি, ৫২ রান অতিরিক্ত দিয়েছি, এটা সত্যিই কষ্ট দিচ্ছে আমাদের। তারপর ১ উইকেটে ১২৪ রান করে পাঁচজন মূল ব্যাটারকে হারালাম, এটাও আমাদের জিততে না পারার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। তারপর অস্ট্রেলিয়া যখন ১৬ রানে চার উইকেট হারালো, তখন আমরা কয়েকটি ক্যাচ ফেললাম, যেগুলো নেওয়া উচিত ছিল। আমরা যদি সুযোগগুলো কাজে লাগাতাম এবং ওই মুহূর্তগুলো নিজেদের করে নিতাম, সম্ভবত আরও আগেই ম্যাচ শেষ হতো এবং আমরা জিততাম।’
দুই ইনিংসে পাঁচটি করে উইকেট নিয়ে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। হাফিজ যা বলেছেন, সেটা জানাতেই তিনি ফিসফিসিয়ে বললেন, ‘বাহ। হ্যাঁ, তারা ভালো খেলতে পারে, কিন্তু আমরা জিততে পেরে খুশি। এটা আসলে কোনও ব্যাপার না, কোনও বড় ব্যাপার কি? (তারা ভালো দেল ছিল)। আসল ব্যাপার হলো শেষ পর্যন্ত কে জিতলো।’