নবীন হাসান :প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আম।ফলন ভালো হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে নানা সমস্যা মোকাবেলা করে এবার দ্বিতীয়বারের মতো ঠাকুরগাঁওয়ের আম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে ইউরোপে। এতে করে বাগান মালিক এবং ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হবেন তেমনিভাবে সমৃদ্ধ হবে জেলা ও দেশের অর্থনীতি।
হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও।অর্থকরী ফসলসহ এই জেলায় উৎপাদন হয় ধান, গম, ভুট্টা, শাকসবজি ও নানা দেশি–বিদেশি ফল। যা জেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দেশের চাহিদা পূরণেও। তবে আম এমন একটি ফল যা শুধু জেলার বা দেশের চাহিদাই পূরণ করছে না রপ্তানি করা হচ্ছে বিদেশেও। ঠাকুরগাঁও থেকে এবার দ্বিতীয়বারের মতো ব্যানানা ম্যাংগো,আম্রপালি, বারি আম সহ বিভিন্ন জাতের আম ইউরোপে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে ।
তবে বিমান খরচ বাড়ায় কিছুটা শঙ্কিত বাগান মালিকরা।এতে আগ্রহ হারাচ্ছে আম বাগান মালিকরা। দাবি সরকারের হস্তক্ষেপের।
মুন্সিরহাটের আম বাগান মালিক আমিনুল ইসলাম বলেন, বিমান ভাড়া বাড়ায় আমরা ক্ষতির মুখে পড়েছি। এতে লাভের বেশিভাগ অংশ বিমান ভাড়ায় চলে যাচ্ছে। গত বছর আম পাঠাতে বিমান ভাড়া পড়েছিল প্রতি কেজি ১৮০ টাকা আর এবার প্রতি কেজি আম পাঠাতে খরচ পড়ছে ৪০০ টাকা। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং কৃষি মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি।
অন্য দিকে পীরগঞ্জের আমবাগান মালিক একরামুল হক বলেন, নিজের হাতে লাগানো গাছের আম বিদেশের মাটিতে যাচ্ছে এতে খুব ভালো লাগছে ।এবং আম রপ্তানি করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। তবে একদিকে বিমানের ভাড়া যেমন বেড়েছে আবার অন্যদিকে বিমানে পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না এতে করে আমাদের আম পাঠাতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ কারণেই অনেক আম চাষী বিদেশে আম পাঠানো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
এবার বিষয়ে রপ্তানি কারো প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড লিংকের সিইও কাউসার আহমেদ রুবেল বলেন, ঠাকুরগাঁও এর আম অত্যন্ত সুস্বাদু এবং সাইজে অনেক বড় তাই এটি রপ্তানির উপযোগী। এই কারণেই দ্বিতীয়বারের মতো আম রপ্তানি করা হচ্ছে এই জেলা থেকে। আমের গুণগত মান এরকম থাকলে বিদেশে আমাদের আমের চাহিদা বাড়বে।
এবছর জেলায় ৩২২১ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে জানিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, শুরুতে আমরা ৩০ জন কৃষককে আমের রাজধানী চাপাইনবাবগঞ্জে নিয়ে যাই এবং বাগান ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেই। তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করার পর অনেকেই আম চাষে আগ্রহী হন এবং গত বছর প্রথম বারের মতো ইউরোপে আম রপ্তানি করি।
তিনি আরো বলেন আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ভাবে দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপের আম পাঠানো শুরু হবে।প্রথমে বিভিন্ন কৃষকদের কাছ থেকে মানসম্মত আম সংগ্রহ করা হবে তারপর তা প্রক্রিয়াজাত করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হবে। আমরা কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছি। কৃষকদের সমস্যাগুলো আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।