নবীন হাসান: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, বসন্ত বরণ এবং বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে ফুলের চাষ।এ সময় ফুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় দাম ভালো পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা। এসব দিবসকে সামনে রেখেই ঠাকুরগাঁওয়ের নারগুন, বেগুনবাড়ি সহ বিভিন্ন জায়গায় ফুল চাষিরা এখন ব্যস্ত শেষ সময়ের ফুল পরিচর্যায়।জমিতে সেচ, সার প্রয়োগ ও পরিচর্যায় দিন কাটছে তাদের। বিশেষ দিনে ফুলের চাহিদা বাড়ে। তাই মৌসুমের কাছাকাছি বিশেষ দিনের কথা মাথায় রেখে শেষ মুহূর্তেও এই বাড়তি পরিচর্যা।
ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি এবং আবহাওয়া ফুল চাষের উপযোগী হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে ফুলের চাষ। ফুলের চাহিদা মেটাতে কাজ করছে চাষিরা।
নারগুন গ্রামের ফুল চাষী শাম??? বলেন, ২৫ শতক জমিতে গাঁদা এবং ২৫ শতক জমিতে গোলাপ চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুল ও ভালো এসেছে। আশা করছি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বেচাকেনা ভালো হলে লাভের মুখ দেখবো।
একই গ্রামের ফুল চাষী প্রিন্স বলেন, সারা বছর মুখিয়ে থাকি এই মাসটির জন্য। বসন্ত বরণ, ভালবাসা দিবস সহ এ মাসেই মাতৃভাষা দিবস। তাই ফুলের চাহিদা এ মাসে অন্যান্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। তাই এই মাসটিকে ঘিরে নিতে হয় বাগানের বিশেষ পরিচর্যা।
বেগুনবাড়ি গ্রামের গোলাপ চাষি রুহুল আমিন বলেন, ফুল চাষ অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসা। সঠিকভাবে গাছের পরিচর্যা করতে পারলে অন্য ফসলের থেকে এটি লাভজনক। বিক্রির ঝামেলা নেই, বাগান থেকেই ফুল ব্যবসায়ীরা এসে কিনে নিয়ে যায়। তাই সামনের বছর আশা করছি আরও দ্বিগুণভাবে ফুল চাষ করব।
এসব ফুল বাগানে সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মানুষের কর্মসংস্থানও। ফুল বাগানের শ্রমিক লতা বেগম বলেন, ফুলবাগান গুলো হওয়াতে আমরা সারা বছর কাজ পাই। বাগানে গাছের পরিচর্যা করেই প্রতি মাসে বেতন পাই ১৫ হাজার টাকা। এতে করে আমাদের সংসারে ফিরেছে সচ্ছলতা।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ–পরিচালক আলমগীর কবির জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে এবার গাঁদা, গোলাপ, রজনীগন্ধা সহ বিভিন্ন রকমের ফুলের চাষ হয়েছে। এ ধরনের ফুল চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। দিন দিন ফুলের চাহিদা বাড়ায় কৃষকরাও ফুল চাষের প্রতি ঝুকছে বেশি। বাজার মূল্য এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থা ভালো থাকলে কৃষকরা আরো বেশি ফুল চাষে আগ্রহী হবে।এবং কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরে সারা বছরের খরচ পুষিয়ে নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ফুল চাষিরা।
চলতি বছর জেলার প্রায় নয় বিঘা জমিতে ফুল চাষ করা হচ্ছে বলে জানান ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।